হজ্জ্ব

মক্কা মুকর্‌রামাতে দোয়া কবুলের বিশেষ কয়েকটি স্থান
১. মাতাফ- তাওয়াফ করার জায়গা।
২. মুলতাযাম - কা’বা ঘরের দরজা ও হাজরে আসওয়াদের মধ্যবর্তী স্থান।
৩. মীযাবে রহমতের নীচে - হাতীমের মধ্যে বায়তুল্লাহ্‌র ছাদে পানি পড়ার নালীর নীচে।
৪. হাজরে আসওয়াদ ও রুকনে ইয়ামানীর মধ্যবর্তী স্থানে।
৫. মাকামে ইব্রাহীমের পিছনে।
৬. সাফা ও মারওয়া পাহাড়দ্বয়ের উপরে বা শীর্ষদেশে।
৭. যমযম কুয়ার কাছে।
৮. জাবালে রহমতে।
৯. জাবালে নূর বা গারে হেরাতে - পাহাড়ের উপরে উঠা জরুরী নয়।
১০. জাবালে সাওর বা গারে সাওরে- পাহাড়ের উপরে উঠা জরুরী নয়।
১১. মাওলিদুন্‌ নবীতে- অর্থাৎ নবী (সাঃ) এর জন্মস্থানে।
হারাম শরীফের কয়েকটি বিশিষ্ট স্থান
১. মাতাফঃ কাবা ঘরের চারদিকে অবস্থিত তাওয়াফের স্থানকে মাতাফ বা তাওয়াফ চত্তর বলে।
২. হাজরে আসওয়াদঃ কাবা ঘরের পূর্ব-দক্ষিন কোন সিনা বরাবর উঁচুতে দেয়ালের সাথে গেঁথে রাখা কাল পাথর খন্ডকে হাজরে আসওয়াদ বলে। একে চুম্বন করা সুন্নত। কিন্তু বর্তমানে প্রচন্ড ভিড় হয়। এরূপ পরিস্থিতিতে দূর থেকে হাত দ্বারা ইশারা করলেই চলে। এই হাজরে আস্‌ওয়াদ থেকে তাওয়াফ শুরু হয়।
৩. কাবাঘরঃ কাবা ঘরটি প্রায় বর্গাকৃতি। দৈর্ঘ্য আনুমানিক ৪৫ ফুট আর প্রস্থ ৪০ ফুট। কাবা শরীফের দরজা ১টি এবং তা কাবা ঘরের পূর্বদিকে অবস্থিত।
৪. মিজাবে রহমতঃ বায়তুল্লাহর উত্তর দিকের ছাদে (হাতীমের মাঝ বরাবর) যে নালা বসানো আছে, তাকে মিজাবে রহমত বলে। এই নালা দিয়ে ছাদের বৃষ্টির পানি পড়ে।
৫. মাকামে ইব্রাহীমঃ কাবা ঘরের দরজা বরাবর ১০/১২ হাত পুবদিকে আয়না ঘেরা ছোট্ট গম্বুজ আকৃতির একটি ঘর আছে। এই ঘরকে ‘মাকামে ইব্রাহীম’ বলে। এ ছোট ঘরে রক্ষিত একখানি পাথরে হযরত ইব্রাহীম (আঃ) এর পবিত্র পদযুগলের ছাপ অংকিত আছে। পবিত্র কা’বা ঘর নির্মানের সময় হযরত ইব্রাহীম (আঃ) এ পাথরে দাঁড়িয়ে কাজ করতেন। আল্লাহ্‌র কুদরতে এ পাথরটি প্রয়োজনমত উপরে এবং নীচে উঠানামা করত। তাওয়াফ শেষে মাকামে ইব্রাহীমের পিছনে দাঁড়িয়ে দুই রাকাত ওয়াজিবুত তাওয়াফ নামাজ পড়তে হয়।
৬. হাতীমঃ কাবা ঘরের উত্তর দিকে অবস্থিত। অর্ধবৃত্তাকারের এক মানুষ সমান উঁচু প্রাচীর ঘেরা স্থানকে হাতীম বলে। ইহা কাবা ঘরের অংশ বিশেষ। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) নবুয়ত লাভের কিছু পূর্বে কুরাইশরা অর্থাভাবের কারনে কা’বা ঘর সংস্কারের সময় এ অংশ ছেড়ে দেয়। এ ছেড়ে দেয়া অংশই হাতীম। তাওয়াফের সময় এর বাইরে দিয়ে তাওয়াফ করতে হয়। ইহাও দোয়া কবুলের স্থান। এখানে নামাজ আদায় করা কাবা ঘরের ভিতের নামাজ আদায় করার সমতূল্য। তবে ফরজ নামাজ এখানে পড়া নিষেধ।
৭. মুলতাজেমঃ হাজরে আসওয়াদ ও কাবাঘরের দরজার মধ্যবর্তী স্থানকে মুলতাজেম বলে। এ জায়গায় বিশেষভাবে দোয়া কবুল হয়। কাউকে কষ্ট না দিয়ে যখনই আপনার সম্ভব হয় তখনই এই মোবারক স্থানটি আঁকড়িয়ে ধরবেন। বুক এবং চেহারা দেয়ালের সাথে লাগাবেন। উভয় হাত উপরে উঠিয়ে দেয়ালে স্থাপন করবেন এবং খুব কাকুতি-মিনতি সহকারে দোয়া করবেন। আরবী দোয়া জানা না থাকলে যে কোন ভাষায় দোয়া করতে পারেন। এইখানে দোয়া কবুলের বিষয়টি বুযুর্গানে দ্বীনেরও পরীক্ষিত।
৮. আবে যমযমঃ এটি পুরাতন একটি কুপ। শিশু হযরত ঈসমাইল (আঃ) ক্ষুধা ও পিপাসায় যখন কাতর হয়ে পড়েন, তখন আল্লাহ্‌র কুদরতে এ কুপের উদ্ভব হয়। এটি পৃথিবীতে অবস্থিত সকল পানি হতে উত্তম। প্রসিদ্ধ সাহাবী হযরত আবু যর গিফারী (রাঃ) যখন রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর সাক্ষাতের উদ্দেশ্যে মক্কায় আগমন করেন, তখন তিনি শুধুমাত্র যমযমের পানি খেয়ে চল্লিশ দিন কাটিয়েছিলেন। হযরত যাবের থেকে বর্নিত, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ যমযমের পানি যে উদ্দেশ্যে পান করবে, তা সে উদ্দেশ্যেই পুরন হবে। হাদীস শরীফে বর্নিত আছে, যমযমের পানি দ্বারা সকল প্রকার রোগ হতে মুক্তি পাওয়া যায়।

মক্কায় বিশিষ্ট দর্শনীয় স্থানসমূহঃ
১. জাবালে ছওরঃ এটি মক্কা শরীফে অবস্থিত একটি প্রসিদ্ধ পাহাড়। এ উচ্চতা পাঁচশত মিটার। এটি মক্কা হতে তিন মাইল দক্ষিনে অবস্থিত। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) ও হযরত আবু বকর (রাঃ) হিযরতের রাতে এ পাহাড়ের একটি গুহায় আশ্রয় নিয়েছিলেন।
২. জাবালে নূর বা গারে হিরাঃ এ পাহাড়টি মক্কা শরীফ থেকে উত্তর দিকে পাঁচ কিলোমিটার দুরে অবস্থিত। এর উচ্চতা প্রায় দুইশত মিটার। নবুয়ত প্রাপ্তির পূর্বে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এ পাহাড়ে ইবাদতে মগ্ন থাকতেন। এ পাহাড়েই জিব্রাইল (আঃ) প্রথম ওহী নিয়ে আগমন করেন।
৩. জান্নাতুল মোয়াল্লাহঃ এটা মক্কা শরীফের উত্তর পূর্বে অবস্থিত। অনেক পুরাতন কবরস্থান এটা। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর দাদা আব্দুল মোত্তালেব, চাচা আবু তালেব ও আরো অনেক আত্মীয়ের কবর এখানে অবস্থিত। এই কবরস্থানেই হযরত খাদিজা (রাঃ) ও আব্দুল্লাহ ইবনে যুবাইর, হযরত আসমা বিনতে আবুবকর (রাঃ) এর কবর অবস্থিত।
৪. মসজিদে জিনঃ মসজিদে জিন জান্নাতুল মোযাল্লাহ কবরস্থানের পাশে অবস্থিত। বর্তমানে খুব সুন্দর করে সেখানে একটি মসজিদ তৈরী করা হয়েছে। জিনদের কোরআন শোনার রাতে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) যে জায়গায় দাগ এঁকেছিলেন, বর্তমানে মসজিদটি সেখানে অবস্থিত।
৫. জাবালে রহমতঃ এই পাহাড়টি আরাফাত ময়দানের মাঝে অবস্থিত। এটিকে ‘আরাফাতের পাহাড় এবং দোয়ার পাহাড়’ ও বলা হয়। এই পাহাড়টির উপরে হযরত আদম (আঃ) এর গোনাহ মাফ হয়েছিল। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বিদায় হজ্জের দিন এই পাহাড়ের বড় পাথরগুলোর পার্শ্বে দাঁড়িয়ে কিবলামুখী হয়ে দু’য়া করেছেন, পাহাড়ের উপর উঠেননি। তাই হজ্জের দিন রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর অনুকরনে জাবালে রহমত এর পার্শ্বে দাড়ানো সুন্নত। আরাফাতের সর্বত্রই অকুফের স্থান।
৬. মাওলিদুন নবীঃ নবী (সাঃ) এর জন্মস্থান।
৭. দারে আরকামঃ ইসলামের প্রথম প্রচারকেন্দ্র। এখানে হযরত ওমর (রাঃ) ইসলাম গ্রহন করেছিলেন।
৮. মসজিদে বেলালঃ ইহা জাবালে আবু কোবায়েসের উপর অবস্থিত।
৯. মসজিদে খালেদ
১০. মসজিদে খায়েফ
১১. মাশয়ারিল হারামঃ মুজদালিফায় অবস্থিত।
১২. উম্মুল মুমিনীন খাদিজা (রাঃ) এর বাড়ী, ফাতিমার জন্মস্থান।
যিয়ারতে মদীনা মোনাওয়ারাহ্‌
মসজিদে নববী যিয়ারতের সঙ্গে হজ্জের কোন সম্পর্ক না থাকলেও মসজিদে নববী যিয়ারত এবং তাতে নামাজ আদায় বড়ই সওয়াবের কাজ। বড়ই সৌভাগ্যবান সেই ব্যক্তি, যে এই মোবারক যিয়ারতে মদীনার তওফীক লাভ করে। কেননা, মসজিদে নববীতে এক ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা, মসজিদে হারাম ছাড়া অন্য যে কোন মসজিদে হাজার ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ।
বুখারী ও মুসলিম শরীফে এসেছে- তিনটি মসজিদ ব্যতীত অন্য কোন স্থানের উদ্দেশ্যে সফর করো না। মসজিদুল হারাম, মসজিদে নববী ও মসজিদুল আকসা। সে হিসাবে মদীনা গমনের উদ্দেশ্যে, কবর যিয়ারত হলে তা শুদ্ধ হবে না। নিয়ত করতে হবে মসজিদে নববী জিয়ারতের। তাই মসজিদে নববী যিয়ারতের নিয়ত করে আপনি মদীনার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হবেন। মদীনায় প্রবেশের সময় সেখানে ইসলামের যে ইতিহাস তৈরী হয়েছে, তা স্মরন করুন। মক্কার মত মদিনাও পবিত্র। তাই মদিনায় গিয়ে যাতে আপনার দ্বারা কোন বেয়াদবি না হয়, কোন গুনাহ্‌-পাপে লিপ্ত না হন, সেজন্য বেশী বেশী দরুদ শরীফ পড়ুন ও আল্লাহর সাহায্য কামনা করুন।
মদীনায় আপনার হোটেল বা বাসায় গিয়ে মালপত্র রেখে ১৫/২০ মিনিট বিশ্রাম নিয়ে গোছল করুন। অসুবিধা থাকলে ওজু/তায়াম্মুম করুন। তারপর ভাল কাপড় (সাদা হলে ভাল) পরিধান করে আতর-খুশবু ব্যবহার করে মসজিদে নববীর দিকে ভক্তি ও শ্রদ্ধার সাথে রওয়ানা দিন। মসজিদে নববীতে যাওয়ার জন্য কোন ইহ্‌রাম-তালবিয়া নেই। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর উপর দরুদ ও সালাত পড়ে পড়ে যেতে হবে এ ব্যাপারেও কোন হাদিস নেই। মদীনার গাছপালার ওপর নজর পড়ামাত্র অথবা সবুজ গম্বুজের উপর দৃষ্টি পড়া মাত্র সালাত ও সালাম পড়তে হবে, এ মর্মেও রাসুলুল্লাহ (সাঃ) ও সাহাবায়ে কেরাম থেকে কোন আদর্শ নেই। যারা এরূপ করতে বলেছেন তারা একান্তই আবেগতাড়িত হয়ে বলেছেন। উপযুক্ত দলীল ব্যতীত আবেগের যথেচ্ছা ব্যবহারের কারনেই ইসলামী শরীয়ত স্বচ্ছতা হারিয়েছে অনেক ক্ষেত্রেই।
মসজিদে নববীতে পৌঁছে যদি সম্ভব হয় বাবে জিব্রাইল অথবা বাবুস্‌সালাম দরজা দিয়ে মসজিদে প্রবেশ করুন। অন্যথায় যে কোন দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারেন। মসজিদে প্রবেশের সময় অত্যন্ত বিনয় ও নম্রতার সাথে প্রথমে ডান পা রাখুন। আল্লাহ্‌র নাম স্মরন করুন। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর প্রতি দরুন পাঠ করুন। আল্লাহ যেন আপনার জন্য তার রহমতের সমস্ত দরজা খুলে দেন সেজন্য দোয়া করুন।
বলুন-
بسم الله و الصلاة و السلام على رسول الله – اللهم اغفرلى ذنوبى وافتح لى ابواب رحمتك-
(বিসমিল্লাহি ওস্‌সালাতু ওস্‌সালামু আ’লা রাসুলিল্লাহি; আল্লাহুম্মাগফিরলি জুনুবি ওয়াফ্‌তাহ্‌লি আব্‌ওয়াবা রাহমাতিকা)।
অর্থঃ মহান আল্লাহ্‌র নামে শুরু করছি, দোয়া ও সালাম রাসুল (সাঃ) এর উপর। হে আল্লাহ, আমার পাপসমূহ ক্ষমা কর, আর আমার জন্য তোমার রহমতের দরজা খুলে দাও।
মসজিদে প্রবেশের পর, বসার পূর্বে দুখুলুল মসজিদের দু’রাকাত নামাজ আদায় করুন। হাদীসে এসেছে, তোমাদের মধ্যে যখন কেউ মসজিদে প্রবেশ করে, সে যেন দু’রাকাত নামাজ আদায়ের পূর্বে না বসে’। রওজাতুল জান্নাত মসজিদের মেহরাবের কাছে সাদা ও সবুজ কার্পেট বিছানো জায়গায় নামাজ আদায় করতে পারলে ভালো। কেননা, রওজা শরীফ পবিত্রতম একটি জায়গা, বেহেশতের বাগান হিসাবে হাদীসে যার পরিচয় এসেছে। রওজায় জায়গা না পেলে যে কোন স্থানে দুখুলুল মসজিদ নামাজ আদায় করুন।
এরপর লাইন ধরে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর পবিত্র রওজার দিকে এগিয়ে যান। রওজা শরীফে পৌঁছে চেহারা মোবারকের বরাবর একটু পিছন দিকে দাঁড়িয়ে যান। জালির একেবারে কাছে যাবেন না এবং একেবারে বেশী দূরেও সরে যাবেন না। কেবলার দিক পিছন করে অত্যন্ত ভক্তি ও আবেগের সাথে দরূদ ও সালাম পেশ করুন। দাঁড়ানোর সুযোগ না পেলে চলমান অবস্থাতেই রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর প্রতি মৃদুস্বরে দরূদ ও সালাম পেশ করুন। বলুনঃ -
السلام عليك ايها النبى و رحمة الله و بركاته-
(আস্‌সালামু আলাইকা আইউহান নাবিউ ও রাহমাতুল্লাহি ওবারকাতুহু) ।
অর্থঃ হে নবী! আপনার প্রতি অজস্র ধারায় শান্তি বর্ষিত হোক এবং আল্লাহর রহমত ও বরকত বর্ষিত হোক
الصلاة و السلام عليك يا رسول الله (আস্‌সালাতু ওয়া আস্‌সালামু আলাইকা ইয়া রাসুলুল্লাহ্‌ )
অর্থঃ হে আল্লাহর রসুল! আপনার প্রতি অসংখ্য দরূদ ও সালাম।
الصلاة و السلام عليك يا حبيب الله -(আস্‌সালাতু ওয়া আস্‌সালামু আলাইকা ইয়া হাবিবাল্লাহ্‌ )
অর্থঃ হে আল্লাহর হাবীব, আপনার প্রতি অসংখ্য দরূদ ও সালাম।
الصلاة و السلام عليك يا شافع المذنبين (আস্‌সালাতু ওয়া আস্‌সালামু আলাইকা ইয়া শফিয়ালমুজনাবিন)
অর্থঃ হে গোনাহগারদের সুপারিশকারী! আপনার প্রতি অজস্র দরূদ ও সালাম।
الصلاة و السلام عليك يا رحمة اللعالمين (আস্‌সালাতু আস্‌সালামু আলাইকা ইয়া রাহ্‌মাতাল্লিল আ’লামিন)
অর্থঃ হে বিশ্বজাহানের রহমতস্বরূপ! আপনার প্রতি অনেক অনেক দরুদ ও সালাম।
কাজী আবুবকর ইবনে আরবী (রহঃ) বলেনঃ রাসুলুল্লাহ (সাঃ) সম্মান ও আদব তার ওফাতের পরও জীবদ্দশার মত ওয়াজিব। তাই তার পবিত্র কবরের সামনে উচুস্বরে সালাম ও কালাম করা আদবের খেলাফ।
এরপর সামনের দিকে একগজ পরিমান এগিয়ে যান। এখানে হযরত আবুবকর সিদ্দিক (রাঃ) এর প্রতি সালাম পেশ করুন। বলুন-
السلام عليك يا ابا بكر (আস্‌সালামু আলাইকা ইয়া আবাবকর)
অর্থঃ হে আবুবকর (রাঃ)! আপনার প্রতি অসংখ্য সালাম।
السلام عليك يا خليفة رسول الله (আস্‌সালামু আলাইকা ইয়া খলিফাতা রাসুলিল্লাহি )
অর্থঃ হে রাসুলুল্লাহ্‌র খলিফা আপনার প্রতি অসংখ্য সালাম।
رضى الله عنك و جزاك عن امة محمد خيرا
(রাদিয়াল্লাহু আনকা ও জাযাকা আন উম্মাতি মুহম্মাদি খাইরান্‌)
অর্থঃ আল্লাহ আপনার উপর রাজী হউন। উম্মাতে মোহাম্মদীর পক্ষ থেকে আল্লাহ্‌ আপনাকে উত্তম প্রতিদানে ভূষিত করুন।

এরপর আরেকগজ সামনে আগান। এখানে ওমর (রাঃ) এর প্রতি সালাম পেশ করুন। বলুন-
السلام عليك يا عمر (আস্‌সালামু আলাইকা ইয়া ওমর।)
অর্থঃ হে ওমর! আপনার উপর অজস্র সালাম।
السلام عليك يا امير المومنين (আস্‌সালামু আলাইকা ইয়া আমিরুল মু’মিনীন)
অর্থঃ হে আমিরুল মোমেনীন! আপনার উপর অজস্র সালাম।
رضى الله عنك و جزاك عن امة محمد خيرا
(রাদিয়াল্লাহু আনকা ও জাযাকা আন উম্মতিম মোহাম্মাদি খাইরান্‌।)
অর্থঃ আল্লাহ আপনার উপর রাজী হন এবং উম্মতে মোহাম্মাদীর পক্ষ থেকে আল্লাহ আপনাকে উত্তম প্রতিদানে ভূষিত করুন।
এরপর বাইরে চলে আসুন। কেবলামুখী হয়ে বা কবরের দিকে মুখ করে দোয়া করবেন না। ইমাম মালেক (রাহঃ) বলেন, “কবরের কাছে দোঁয়া করতে দাঁড়ানো আমি শুদ্ধ মনে করি না। তবে সালাম দেবে ও চলে যাবে যেমনটি করতেন ইব্‌নে ওমর (রাঃ)।”
মহিলাদের জন্য নবী করিম (সাঃ) এর কবর যিয়ারত জায়েয নয়, তাছাড়া অন্য কোন কবরও নয়।
নবীজী বলেছেন- ‘যে সব মহিলা কবর যিয়ারত করবে তাদের উপর আল্লাহ্‌র অভিশাপ বর্ষিত হয়।‘(তিরমিযী-৩২০)
তাই মহিলারা মসজিদে নববীতে নামাজ পড়তে যাবে এবং নিজ জায়গায় বসেই রাসুলুল্লাহ (সাঃ) কে সালাম দিবে। যে কোন জায়গা থেকে সালাম পাঠালেও তা নবী (সাঃ) এর রওজায় পৌঁছিয়ে দেয়া হয়।
পরামর্শঃ রাসুলুল্লাহ (সা) এর পবিত্র কবর হুজরা শরীফের অভ্যন্তরে অবস্থিত। তাই কবরের দেয়াল ছুঁয়ে বরকত নেয়ার জযবা অনেকের মধ্যে থাকলেও তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয় না। আসলে এ ধরনের জযবা-বাসনা থাকাই উচিত নয়। কেননা কবরের চারপাশে তাওয়াফ, কবর ছুঁয়ে বরকত নেওয়া ইত্যাদি শরীয়তে অনুমোদিত নয়। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) কঠিনভাবে নিষেধ করেছেন যে তার কবরকে যেন পূজ্য মূর্তিতে রূপান্তরিত না করা হয়। আর স্পর্শ ও চুম্বন করার বিধান তো কেবল হাজরে আসওয়াদের বৈশিষ্ট্য। পবিত্র কাবার রুকনে ইয়ামানি স্পর্শ করার বিধান রয়েছে। এছাড়া অন্য কোন জায়গা, এমনকি পবিত্র কাবার অন্য কোন অংশ স্পর্শ করে বরকত নেওয়ারও বিধান নেই।
তাছাড়া যিয়ারতের সময় অত্যন্ত সাবধান থাকবেন যে, নবী (সাঃ) এর কাছে কোন সাহায্য চাওয়া যাবে না। রোগমুক্তি বা কোন মকসুদ পুরনের জন্য রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বা মৃত কবরবাসীর কাছে কোন কিছু চাওয়া যায় না। চাইতে হবে শুধু আল্লাহ গাফুরুর রাহীমের কাছে। কবরবাসীদের কাছে চাইলে তা শির্‌ক হয়ে যাবে। আর শির্‌ক করলে সব নেক আমল বাতিল হয়ে যাবে। ফলে সে আর মুসলিম থাকবে না।
আপনি যতদিন মদীনায় অবস্থান করবেন, সময় সুযোগ পেলেই এই নিয়মে যিয়ারত করার চেষ্টা করুন।
মসজিদে নববীতে জামাতে নামাজ
মনে রাখবেন, কোন অবস্থাতেই যেন মসজিদে নববীতে আপনার জামাতের নামাজ ছুটে না যায়। মসজিদে নববীতে এক ওয়াক্ত নামাজের সওয়াব মুসলিম ও বোখারী শরীফের বর্ননা অনুযায়ী এক হাজার অপেক্ষাও বেশী। ইবনে মাজাহ্‌ শরীফের এক রেওয়ায়েতে পঞ্চাশ হাজার নামাজের সমান বলে উল্লেখ করা হয়েছে। নবী করীম (সাঃ) ইরশাদ করেছেন- ‘যে ব্যক্তি আমার মসজিদে ৪০ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করবে এবং একটি নামাজও বাদ দিবে না, তার জন্য দোযখ থেকে মুক্তি ছাড়পত্র লিখে দেওয়া হবে’। এজন্য মসজিদে নববীতে জামাতে নামাজ পড়ার বিশেষ চেষ্টা করতে হবে।
মসজিদে নববীর ভিতরের গুরুত্বপূর্ন জায়গাসমূহ
আছহাবে ছুফফা চত্বর
বাবে জিব্রাইল দিয়ে মসজিদে নববীতে প্রবেশ করলে ডান দিকে হলো আসহাবে সুফফার চত্তর- যেখানে এমন তিন-চারশত সাহাবায়ে কেরাম বিভিন্ন সময়ে তাশরীফ রাখতেন, যারা এলেম শিখা ও ইসলাম প্রচারে নিজেদেরকে ওয়াক্‌ফ করে দিয়েছিলেন। তাদের অন্যতম হলেন হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ, হযরত আবু জর গিফারী ও হযরত বেলাল হাবসী (রাঃ)।
সুফফার সামনের দেয়ালে একটি মেহ্‌রাব তৈরী আছে। এতে ‘মেহরাবে তাহাজ্জুদ’ লেখা আছে। এখানে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করতেন।
রিয়াদুল জান্নাত
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ ‘আমার ঘর ও আমার মিম্বারের মধ্যবর্তী স্থান জান্নাতের বাগান সমূহ থেকে একটি বাগান’।– (মুসলিম)। তাই মসজিদে নববীর পুরোটাই খায়র ও বরকতের খাজানা হওয়া সত্বেও এই খাস অংশটুকু বিশেষ বরকতময়।এই অংশের সীমা নির্ধারনের জন্য সাদা স্তম্ভ তৈরী হয়েছে এবং তাতে সবুজ নক্‌শা করা গালিচা বিছিয়ে রাখা হয়েছে। এই মুবারক অংশে সাতটি স্তম্ভ বিশেষ বিষয়ে বৈশিষ্ট্যমন্ডিত ও প্রসিদ্ধ। এখানে নফল আদায়কারীদের খুবই ভিড় হয়।
উস্তোয়ানা (স্তম্ভ)
১. উস্তওয়ানা হান্নানাঃ মিম্বারে নববীর ডানপার্শ্বে অবস্থিত খেজুর বৃক্ষের গুড়ির স্থানে নির্মিত স্তম্ভটি। যে গুড়িটি রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর মিম্বার স্থানান্তরের সময় উচ্চঃস্বরে ক্রন্দন করেছিল।
২. উস্তওয়ানা ছারীরঃ এখানে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এতেকাফ করতেন এবং রাতে আরামের জন্য তার বিছানা এখানে স্থাপন করতেন। এ স্তম্ভটি হুজরা শরীফের পশ্চিম পার্শ্বে জালি মোবারকের সাথে রয়েছে।
৩. উস্তওয়ানা উফুদঃ বাহির থেকে আগত প্রতিনিধিদল এখানে বসে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর হাতে ইসলাম গ্রহন করতেন এবং তাদের সাথে এখানেই বসে কথা বলতেন। এ স্তম্ভটি জালি মোবারকের সাথে রয়েছে।
৪. উস্তওয়ানা হার্‌ছঃ রাসুলুল্লাহ (সাঃ) যখন হুজরা শরীফে তাশরীফ নিয়ে যেতেন, তখন কোন না কোন সাহাবী পাহারার জন্য এখানে বসতেন। এ স্তম্ভটিও জালি মোবারক ঘেঁষে রয়েছে।
৫. উস্তওয়ানা আয়েশা (রাঃ): রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, আমার মসজিদে এমন একটি জায়গা রয়েছে, লোকজন যদি সেখানে নামাজ পড়ার ফজিলত জানত, তবে সেখানে স্থান পাওয়ার জন্য লটারীর প্রয়োজন দেখা দিত। স্থানটি চিহ্নিত করার জন্য সাহাবায়ে কেরাম চেষ্টা করতেন। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর ইন্তেকালের পর হযরত আয়েশা (রাঃ) তার ভাগ্নে হযরত আব্দুল্লাহ্‌ ইবনে যুবাইর (রাঃ) কে সেই জায়গাটি চিনিয়ে দেন। এটিই সেই মঞ্চ। এই স্তম্ভটি উস্তওয়ানা উফুদের পশ্চিম পার্শ্বে রওজায়ে জান্নাতের ভিতর অবস্থিত।
৬. উস্তওয়ানা আবু লুবাবা (রাঃ): হযরত আবু লুবাবা (রাঃ) থেকে একটি ভুল সংঘটিত হবার পর তিনি নিজেকে এই স্তম্ভের সাথে বেঁধে বলেছিলেন, যতক্ষন পর্যন্ত রাসুলুল্লাহ (সাঃ) নিজে না খুলে দেবেন, ততক্ষন পর্যন্ত আমি এর সাথে বাঁধা থাকবো। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) ও বলেছিলেন, যতক্ষন পর্যন্ত আমাকে আল্লাহতায়ালা আদেশ না করবেন, ততক্ষন পর্যন্ত খুলবো না। এভাবে দীর্ঘ ৫০ দিন পর হযরত আবু লুবাবা (রাঃ) এর তওবা কবুল হলো। অতঃপর রাসুলুল্লাহ (সাঃ) নিজ হাতে তার বাঁধন খুলে দিলেন। এটা উস্তওয়ানা উফুদের পশ্চিম পার্শ্বে রওজায়ে জান্নাতের ভিতর অবস্থিত।
৭. উস্তওয়ানা জিব্রাঈল (আঃ): হযরত জীব্রাইল (আঃ) যখনই হযরত দেহইয়া কালবী (রাঃ) এর আকৃতি ধারন করে ওহী নিয়ে আসতেন, তখন অধিকাংশ সময় তাকে এখানেই উপবিষ্ট দেখা যেত।

মদীনার যিয়ারতের অন্যান্য স্থানসমূহ
জান্নাতুল বাকী
জান্নাতুল বাকী- আরবীতে বাকিউল গারকাদ- পবিত্র মদিনার একটি কবরস্থান। যেখানে, ইমাম মালিক (রহঃ) এর কথা মতে, প্রায় ১০ হাজার সাহাবা চিরনিদ্রায় ঘুমিয়ে আছেন। সেজন্য আমাদের পুরুষদের জন্য সুন্নাত হলো ‘জান্নাতুল বাকী’ কবরস্থান জিয়ারত করা। সেখানে শায়িত আছেন উসমান (রাঃ) সহ অসংখ্য সাহাবায়ে কেরাম। হামযা (রাঃ)সহ উহুদ যুদ্ধের শহীদগন ওহুদ প্রান্তে শায়িত আছেন। যিয়ারতের সময় তাদের সকলের জন্য দোয়া করবেন।
জান্নাতুল বাকীতে সমাহিত মুমিনগনের প্রতি সালাম দেয়ার সুন্নাত তরিকা হলো অনির্দিষ্টভাবে সবাইকে একসাথে সালাম দেয়া ও তাদের জন্য দোয়া করা। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) আহলে বাকীর যিয়ারতকালে বলতেন-
السلام عليكم اهل الديارمن المومنين و المسلمين- و انا ان شاء الله بكم لاحقون- يرحم الله المستقدمين منا و المستاخرين - نسال الله لنا و لكم العافية-
(আস্‌সালামু আলাইকুম আহ্‌লাদ দিয়ারি মিনাল মুমিনিনা ওয়াল মুছ্‌লিমিন।ওয়া ইন্না ইন্‌শাল্লাহু বিকুম লাহিকুন। ইয়ার হামুল্লাহুল মুস্‌তাকদিমিনা মিন্না ওয়াল মুসতা’ খিরিন - নাসআলুল্লাহা লানা ওলাকুমুল আফিয়াহ্‌।)
অর্থঃ হে মুমিন ও মুসলিম কবরবাসীগন! তোমাদের প্রতি ছালাম। আল্লাহ তায়ালার ইচ্ছায় অচিরেই আমরা তোমাদের সাথে মিলিত হতে যাচ্ছি। আল্লাহ আমাদের পুর্ববর্তী এবং পরবর্তীদের উপর রহমত বর্ষন করুন। আমরা আল্লার নিকট আমাদের ও তোমাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করি।
মসজিদে কুবা
‘মসজিদে কুবা’ মুসলমানদের সর্বপ্রথম মসজিদ। হুজুর আকরাম (সাঃ) যখন মক্কা মোকাররমা থেকে হিজরত করে মদীনা মোনাওয়ারায় তাশরীফ আনেন, তখন বনি আউফ গোত্রে অবতরন করেন এবং রাসুলুল্লাহ (সাঃ) সাহাবায়ে কেরামদেরকে নিয়ে নিজ মোবারক হাতে এই মসজিদের বুনিয়াদ রাখেন। এই মসজিদ মসজিদে হারাম, মসজিদে নববী ও মসজিদে আকসার পর গোটা দুনিয়ার সর্বশ্রেষ্ঠ মসজিদ।
মদীনা শরীফে গমনকারীদের জন্য মুস্‌তাহাব হলো এই ‘মসজিদে কুবা’ যিয়ারত করা এবং সেখানে নামাজ আদায় করা। কেননা নবী মোহাম্মদ (সাঃ) কোন কিছুতে আরোহন করে বা পায়ে হেঁটে যখনই এখানে আসতেন, তখন তিনি এখানে দু’রাকাত নামাজ আদায় করতেন। (বুখারী ও মুসলিম) রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এরশাদ করেছেন- মসজিদে কুবার দু’রাকাত নামাজের সওয়াব একটি ওমরাহ্‌র সমতূল্য।
মসজিদে কোবায় নামাজ পড়ার নিয়মঃ
মসজিদে কোবায় গিয়ে প্রবেশের সময় ডান পা আগে দেবেন। মসজিদে প্রবেশের দোয়া পড়বেন-
اللهم افتح لى ابواب رحمتك-
(আল্লাহুম্মাফ তাহ্‌লি আবওয়াবা রাহমাতিকা) - অর্থ- হে আল্লাহ! তোমার রহমতের দরজা আমার জন্য খুলে দাও।
মসজিদে প্রবেশ করে দু’রাকাত নফল নামাজ পড়বেন। এ নামাজের আলাদা কোন নিয়ত নেই। কেবল মনে মনে স্থির করবেন, আমি দু’রাকাত নফল নামাজ আদায় করছি। নামাজ শেষ হলে মসজিদ থেকে বের হবেন। বের হবার সময় দোয়া পড়ে বাম পা আগে বাড়াবেন। এখানে অন্য কোন আমল নেই। মসজিদ থেকে বের হবার দোয়া-
اللهم انى اسءلك من فضلك-
(আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা মিন ফাদলিক) অর্থঃ হে আল্লাহ! তোমার পক্ষ থেকে আমি কল্যান কামনার জন্য বের হচ্ছি।
শুহাদায়ে ওহুদের কবর জিয়ারত
মসজিদে নববীর উত্তরে প্রায় ৩ মাইল দূরে ওহুদ পর্বতের পাদদেশে ওহুদ যুদ্ধের ময়দান অবস্থিত। এইখানে ওহুদ যুদ্ধে শাহাদাত বরনকারী প্রায় ৭০জন শহীদ সাহাবায়ে কেরামের কবর আছে। তাদের মধ্যে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর চাচা হামজা (রাঃ) অন্যতম। এদের কবর যিয়ারত করা শরীয়তসম্মত। জান্নাতুল বাকী যিয়ারতের সময় যে সামগ্রিক দোয়া পড়তে হয়, সে দোয়া পড়েই এখানে যিয়ারত করবেন। যে কোন দিন শুহাদায়ে ওহুদের যিয়ারত করা যেতে পারে। বৃহস্পতিবার অথবা শুক্রবার নির্দিষ্ট করার বিষয়ে কোন প্রমান নেই।
মসজিদে কিবলাতাইন
এটি মদীনা মোনাওয়ারার উত্তর পশ্চিমে “ওয়াদীয়ে আতীক্বে”-র সন্নিকটে উঁচুতে অবস্থিত। এর একটি দেয়ালে বায়তুল মোকাদ্দাসমুখী মেহরাবের চিহ্ন খচিত আছে; আরেকটি দেয়ালে কা’বামুখী মেহরাব তৈরী আছে। কথিত আছে যে, কেবলা পরিবর্তনের হুকুম নামাজরত অবস্থায় এই মসজিদেই নাজিল হয়েছিল। এ জন্যেই একে মসজিদ কিবলাতাইন বা দুই কিবলার মসজিদ বলা হয়।
খন্দকের মসজিদ
খন্দকের যুদ্ধের সময় রাসুলুল্লাহ (সাঃ) ও সাহাবীগন যে সকল স্থানে বসে নামাজ পড়েছিলেন এবং দোয়া করেছিলেন, সেখানে পরবর্তীতে পাঁচটি মসজিদ তৈরী করা হয়। যেমনঃ
ক. মসজিদ ফাতাহঃ এই মসজিদের স্থানে বসে নবী করিম (সাঃ) খন্দকের যুদ্ধে মুসলমানদের জয়ের জন্য দোয়া করেছিলেন বলে একে মসজিদে ফাতাহ্‌ বা জয়ের মসজিদ বলা হয়।
খ. মসজিদে সোলায়মান ফারসী (রাঃ)
গ. মসজিদে আবুবকর সিদ্দিক (রাঃ)
ঘ. মসজিদে ওমর (রাঃ)
ঙ. মসজিদে আলী (রাঃ)
মসজিদ পাঁচটি কাছাকাছি ছোট ছোট পাহাড়ে অবস্থিত। একসাথে এই পাঁচটি মসজিদকে “মসজিদে খামস” বলে।
মসজিদে গামামাহ্‌
এই মসজিদকে মসজিদে মুসাল্লাও বলা হয়। এটা সেই জায়গা যেখানে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) ঈদের নামাজ আদায় করতেন এবং এখানেই “সালাতুল ইস্তেকা”-র নামাজ ও আদায় করেছিলেন।